টানা ১৭ দিনের আন্দোলনের পর সরকার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাতে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল আবরারের সঙ্গে বৈঠকের পর এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিত করেছে সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদ।
নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষকরা। চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি শিক্ষকরা দেশের সব জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। এরপরও সরকার দাবি না মানায় ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়।
আন্দোলন চলাকালে দুজন শিক্ষক অর্থসংকটের কারণে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া অবস্থান কর্মসূচির সময় অনেক শিক্ষক রোজা রেখে, তারাবির নামাজ পড়ে ও ইফতার-সেহরি করে সেখানে অবস্থান করেন। পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার ঘটনাও ঘটে।
মঙ্গলবার আন্দোলনরত শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সরকারের পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরসহ অন্যরা।
বৈঠকে শিক্ষকদের দাবির প্রতি একমত পোষণ করে সরকার ঘোষণা দেয়, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সচল সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে। প্রক্রিয়া শুরু হবে বুধবার (১২ মার্চ) থেকে, আর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে মে মাসের মধ্যে।
সরকারের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর নন-এমপিও ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. সেলিম মিঞা জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. দবিরুল ইসলাম, অধ্যক্ষ নাজমুস শাহাদাৎ আজাদী, সাংগঠনিক সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মনিমুল হক, যুগ্ম সাংগঠনিক সমন্বয়ক অধ্যক্ষ ইমরান বিন সোলায়মান, সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. সাজ্জাদ হোসেন ও মো. আব্দুস সালাম।
এই ঘোষণায় আন্দোলনরত শিক্ষকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা আশা করছেন, সরকার দ্রুত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটাবে।
Leave a Reply