বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। চলতি মার্চ মাসের প্রথম ১৫ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৬৫ কোটি ৬১ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০,২০৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে মার্চ মাসের শেষে ৩ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারে রেমিট্যান্স, যা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের নতুন রেকর্ড গড়বে। এর আগে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে সর্বোচ্চ ২.৬৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অর্থপাচার কমে গেছে, হুন্ডির দৌরাত্ম্যও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর দেওয়া ডলারের বিনিময় মূল্য এখন খোলা বাজারের সমান, ফলে প্রবাসীরা বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। এছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে প্রবাসীদের দেশে অর্থ পাঠানোর হার বেড়েছে।
মার্চের প্রথম ১৫ দিনে আসা রেমিট্যান্সের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৭ কোটি ১১ লাখ ডলার, কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৩ কোটি ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১৫ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩১ লাখ ডলার। তবে, সাতটি ব্যাংকের মাধ্যমে এক টাকাও রেমিট্যান্স আসেনি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে মোট ১,৮৪৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের তুলনায় ৩৫৫ কোটি ডলার বেশি। ২০২৪ সালের জুলাই মাস ছাড়া বাকি ১১ মাসেই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।
এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। সরকার এবং ব্যাংকগুলোর সঠিক নীতিমালা কার্যকর থাকলে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়বে এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে।
Leave a Reply